সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেছেন আলোচিত আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সোমবার সাইবার আদালতে এ আবেদন করেছেন তিনি। বেলা ২টায় এ আবেদনের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আদালতের পেশকার শামীম আল মামুন।
সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুর পর মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। এর আগে শ্লীলতাহানির ঘটনায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নিয়ম বহির্ভূত অশ্ললভাষায় জিজ্ঞাসাবাদ ও তা ভিডিও ধারণ করেন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে ওসির বিচারের দাবী ওঠে।
২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে অধ্যক্ষ শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে দুজনকে থানায় নিয়ে যান ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। ওসি নিয়ম ভেঙে জেরা করতে নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেয়ার সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না। ভিডিওটি প্রকাশ হলে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে ওসির সখ্যতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, থানার ওসির সামনে অঝোরে কাঁদছিলেন নুসরাত। আর সেই কান্নার ভিডিও করছিলেন সোনাগাজী থানার ওসি। নুসরাত তার মুখ দু’হাতে ঢেকে রেখেছিলেন। তাতেও ওসির আপত্তি। বারবারই ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলার পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে।’
গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ১০ এপ্রিল (বুধবার) রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে বিকেলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সম্পাদনা: আরএইচ/এনজেটি