বিশ্ব মা দিবস আজ • নতুন ফেনীনতুন ফেনী বিশ্ব মা দিবস আজ • নতুন ফেনী
 ফেনী |
১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব মা দিবস আজ

রাশেদুল হাসানরাশেদুল হাসান
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ১১:০১ পূর্বাহ্ণ, ১০ মে ২০১৫

নতুন ফেনী ডেস্ক>>
বিশ্ব মা দিবস আজ। সন্তানের কাছে সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে প্রিয় হচ্ছেন তার মা। মায়ের গর্ভে সন্তান যেমন রক্ত শুষে নিরাপদে ধীরে ধীরে বড় হয়, তেমনি জন্মের পরও তিল তিল করে মা’ই কেবল তার নাড়ি ছেঁড়া ধনকে তিলে তিলে বড় করে তোলেন আগামীর সম্ভাবনাময় একজন মানুষ হিসেবে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই মে মাসের দ্বিতীয় রোববার উদযাপন হয় দিবসটি। আমাদের দেশের অধিকাংশ মায়ের দিনের বেশির ভাগ সময় যায় সন্তানকে লালন পালন ও সংসারের কাজ করতে। নিজ ঘরে শ্রম দেওয়া মায়েদের অদৃশ্যমান কাজ। ফলে অর্থনীতিতে মায়েদের অবদানের কোনো যোগ নেই। নেই কোনো স্বীকৃতিও। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, শিশু রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিবার পালনসহ একজন মা প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মা-ই সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত থাকেন। গ্রামীণ জীবন যাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান (সিএসআরএল) এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আমাদের মায়েদের মধ্যে ৮১ শতাংশ গৃহকর্মে সরাসরি অবদান রাখছেন। যা শ্রমশক্তির বিবেচনায় ‘অদৃশ্য’। বাংলাদেশে মা তথা নারীর ক্ষমতায়নসহ সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রণীত আইন ও নীতিমালা ফাইলপত্রেই আটকে আছে। উপরন্তু জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখা সত্ত্বেও সরকারি পরিসংখ্যানে এ তথ্য উপেক্ষিত। রাষ্ট্রীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালায় পেশার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, নারীর প্রতি সব সহিংসতা নির্মূল করাসহ বেশ কিছু নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু এগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

ইতিহাসে মা দিবস
মা দিবসের আদি উৎপত্তি প্রাচীন গ্রিসে। প্রাচীন গ্রিক সভ্যতায় ধর্মীয় উৎসব হিসেবে প্রতি বসন্তে ‘মাদার অব গড’ রিয়ার উদ্দেশে বিশেষ একটি দিন উদযাপন করা হতো। তবে ধর্মীয় উৎসব থেকে বেরিয়ে এসে মা দিবস সামাজিক উৎসবে পরিণত হয় ১৬শ` শতাব্দীতে। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রে মায়েদের প্রতি সম্মান জানিয়ে `মাদারিং সানডে` নামে একটি বিশেষ দিন উদযাপন করা হতো। প্রথম দিকে দিবসটি শুধু শহুরে বিত্তবানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু পরে সাধারণ মানুষ বিশেষত কাজের সন্ধানে শহরে ছুটে আসা মানুষের কাছেও পরিচিত হয়ে ওঠে দিবসটি। ফলে এ বিশেষ দিবসের আবেদন ছড়িয়ে পড়ে শহর ছেড়ে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। পরবর্তী সময়ে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে মা দিবসকে আরও সার্বজনীন করে তোলেন আমেরিকার নাগরিক জুলিয়া ওয়ার্ড। দিবসটিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার লক্ষ্যে ১৮৭২ সাল থেকে তিনি ব্যাপক লেখালেখি শুরু করেন। তবে দিবসটিকে জাতীয় উৎসবে পরিণত করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন ফিলাডেলফিয়ার অপর নারী অ্যানা জার্ভিস।

১৯০৭ সালে মা দিবসকে স্বীকৃতি দিতে ব্যাপক প্রচারণা চালান তিনি। সে বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ছিল অ্যানার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী। অ্যানা সেই দিবসটিতেই `মা দিবস` পালন করেন। পরের বছর পুরো ফিলাডেলফিয়া অঙ্গরাজ্যেই বিশাল আয়োজনে পালিত হয় ‘মা দিবস’। অ্যানা ও তার সমর্থকরা `জাতীয় মা দিবস` ঘোষণা করার জন্য দেশের মন্ত্রী, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদদের চিঠি লিখতে শুরু করেন।

অবশেষে ১৯১১ সালে অ্যানা জার্ভিস সফলতা লাভ করেন। সে বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার আমেরিকাজুড়ে একই সঙ্গে পালিত হয় `মা দিবস`। পরে ১৯১৪ সালে প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন দিবসটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেন। এরপর থেকেই বিশ্বের দেশে দেশে মা দিবস পালনের রেওয়াজ ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করে গত প্রায় দেড় যুগ ধরে বাংলাদেশেও প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার নানা আয়োজনে মা দিবস পালন করা হয়।

আপনার মতামত দিন

Android App
Android App
Android App
© Natun Feni. All rights reserved. Design by: GS Tech Ltd.